BADE DEORAIL FULTALI KAMIL MADRASAH
JAKIGANJ,SYLHET. EIIN : 130525
সাম্প্রতিক খবর

 

 
 

বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল (এম.এ) মাদরাসায় আপনাদের স্বাগতম

বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল (এম.এ) মাদরাসা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হযরত শাহজালাল (র.)-এর অন্যতম সহচর হযরত শাহ কামাল (র.)-এর সুযোগ্য উত্তরসূরী বিশিষ্ট আলিম হযরত মাওলানা মোঃ ফাতির আলী (র.)-এর একান্ত প্রচেষ্টায় ১৯২০ ইং সনে এ দ্বীনি মশাল প্রতিষ্ঠিত হয়। হযরত মাওলানা মোঃ ফাতির আলী (র.) ছিলেন মুজাদ্দিদে যামান, শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর বংশীয় চাচাত ভাই এবং তাঁর বাল্য শিক্ষক। হযরত মাওলানা মোঃ ফাতির আলী (র.)-এর একান্ত প্রচেষ্টায় প্রথমে মসজিদ ভিত্তিক লেখাপড়া আরম্ভ হয়। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বর্তমান স্থানে মাদরাসার গৃহ নির্মাণ করা হয়। মাওলানা ফাতির আলী (র.)-এর ইন্তিকালের পর মনসুরপুর নিবাসী মাওলানা মকদ্দছ আলী চৌধুরী সাহেব মাদরাসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে বালাউট নিবাসী মাওলানা মোঃ তৈয়বুর রহমান চৌধুরী সাহেব উক্ত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেদমতে আত্মনিয়োগ করেন। ক্রমান্বয়ে মাদরাসার ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। হযরত ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর ওয়ালিদ মুহতারাম মুফতী মাওলানা আব্দুল মজিদ (র.)-কে এলাকাবাসীর একান্ত অনুরোধে স্বীয় পূর্ব পুরুষের প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় শিক্ষাদানের জন্য নিয়োগ করা হয়। সুষ্ঠুভাবে লেখাপড়া পরিচালনার জন্য মনসুরপুর নিবাসী মাস্টার ছৈদ আলী চৌধুরী, পলাশপুর নিবাসী কারী ছৈদ আলী ও হাবিবুল্লাহ ছাহেব ভাদেশ্বরীকে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।মুফতি মাওলানা আব্দুল মজিদ চৌধুরী ছাহেবের ইন্তিকালের পর মাওলানা মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী ছাহেব মাদরাসার দায়িত্ব আঞ্জাম দেন। তাঁর দায়িত্বে দীর্ঘ দিন মাদরাসা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। ১৯৫৯ সালে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক সর্বপ্রথম স্বীকৃতি পায়। তখন মাদরাসার হেড মাওলানা ছিলেন মাওলানা শাতির আলী ছাহেব বারগাত্তা। পরবর্তীতে যথাক্রমে মাদরাসার দায়িত্বে ছিলেন- মরহুম মাওলানা উবায়দুল্লাহ (র.)মরহুম মাওলানা ইসহাক আহমদ সায়দা চৌধুরী (র.)মরহুম মাওলানা আব্দুল জব্বার (র.) ও মাওলানা মোঃ শুয়াইবুর রহমান।
১৯৭৫ইং সনে প্রলয়ংকরী কালবৈশাখী ঝড়ে মাদরাসা গৃহ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। ফলে মাদরাসার উন্নয়নে বিঘ্নঘটে। এমনি দুরাবস্থায় মাদরাসাটি পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষে হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) তাঁর দানের হাত প্রসারিত করেন। তাঁর বদান্যতা ও প্রবাসীদের সহযোগিতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিলুপ্ত মাদরাসাটি অল্প দিনের মধ্যে পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। মাদরাসার পূর্ব ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার এবং এর উন্নয়নের লক্ষে এ সময় আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর সুযোগ্য ছাহেবজাদা মাওলানা মোঃ নজমুদ্দীন চৌধুরীকে মাদরাসার দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয়। তাঁর একনিষ্ট প্রচেষ্টায় ১৯৭৭ইং সালে মাদরাসাটি আলিম স্তরে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৮৫ইং সালে বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন মাননীয় ধর্মত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রীবাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ জমিয়তুল মোদার্রেছীনের সভাপতি মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা এম.এ. মান্নান সাহেব অত্র মাদরাসার এক সমাবেশে আমন্ত্রিত হয়ে যোগদান করেন। তিনি মাদরাসার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং মাদরাসাটি কামিল পর্যন্ত উন্নীত করার জন্য আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-কে সুপরামর্শ দেন। পরবর্তীতে তাঁরই একান্ত প্রচেষ্টায় মাদরাসাটি ১৯৮৯ সনে ফাযিল১৯৯৪ইং সনে কামিল (হাদীস) ও ২০০১ সনে কামিল (তাফসীর) স্তরে উন্নীত হয়।
দেশের সর্বস্তরের আলিম-উলামামাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রবৃন্দ দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসার ফাযিল ও কামিলকে যথাক্রমে ডিগ্রী ও মাস্টার্সের মান প্রদানের দাবী জানিয়ে আসছিলেন। হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)ও এ দাবীতে সোচ্চার ছিলেন। এ দাবীতে বহু সভা-সমাবেশ ও আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এমনকি তিনি জীবন সায়াহ্নে সিলেট থেকে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ পর্যন্ত করেছেন। আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে সরকার মাদরাসার ফাযিল ও কামিল যথাক্রমে ডিগ্রী ও মাস্টার্সের সমমান প্রদান করে। ফাযিল ও কামিলকে তখন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কুষ্টিয়া এর অধীনে ন্যস্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০১০ইং সনে সারা দেশে ৩১টি মাদরাসায় ৪ বছর মেয়াদি ফাযিল অনার্স কোর্স চালু করা হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও মাউশির জারীকৃত শর্তাদি বিদ্যমান থাকায় অত্র মাদরাসায়ও এর অন্তর্ভূক্ত হয়। এ হিসেবে বর্তমানে মাদরাসায় আল হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে ফাযিল বি.এ(অনার্স), ফাযিল বি.এ (পাস) সহ কামিল হাদীস ও তাফসীর বিভাগ চালু রয়েছে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যোগ্য নেতৃত্বে মাদরাসাটি উন্নতির পানে এগিয়ে চলছে। মাদরাসার সার্বিক উন্নয়নে সকলের দুআ ও সহযোগিতা একান্ত কাম্য।